মহেশখালী প্রতিনিধি (কক্সবাজার):
কক্সবাজার জেলার অবহেলিত জনগোষ্ঠীর মাঝে জেএম ঘাট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার আলোয় আলোকিত হচ্ছে অজপাড়াগাঁ গ্রামটি। এ পাড়ায় স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৭ সালে । এলাকার শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ তখনও অশিক্ষিত। অশিক্ষিত হওয়ায় প্রতিনিয়ত অবহেলা আর বঞ্চনার শিকার হতো হতে এ অঞ্চলের মানুষদের। আর তৎকালীন সমাজ ব্যবস্থাও ছিলো কুসংস্কারে ভরা। ঠিক ওই সময়ে সমাজের কুসংস্কার দূর করে সকলের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন স্থানিয় কয়েকজন ব্যক্তি ৮৭ শতক জমি দান করেন প্রতিষ্ঠানটির নামে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ অঞ্চলে শিক্ষা বিস্তারে অনন্য ভূমিকা রেখে চলছে বিদ্যালয়টি।
সাবেক মেম্বার ছৈয়দ আহমদ, মৌলভী মোহাম্মদ মুজিবুল হক, ফরিদুল আলম, মৌলভী নাছিরের হাত ধরে ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২৬ বছর ধরে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে চলছে ঐতিহ্যবাহী কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার জলেয়ারমারঘাট আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয়টি।
উপজেলা সদর থেকে পাহাড়ের আকাঁবাকা পথ বেয়ে উত্তর প্রান্তে জেমঘাট গ্রামে ওই বিদ্যালয়টির অবস্থান। প্রবল বাধা উপেক্ষা ও সংগ্রাম করে ২৬ বছরের পথ পাড়ি দিয়ে বিদ্যালয়টি আজ ওই এলাকাকে আলোকিত করে তুলেছে। সু-দীর্ঘ পথ চলার মাঝে অনেক ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক এবং কালের স্বাক্ষী হয়ে বর্তমানে ৪শত ৩৯ জন শিক্ষার্থী নিয়ে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বিদ্যালয়টি।
বিদ্যালয়টি প্রথমে ছনের পরে টিনের একটি ঘরে স্কুলটিতে ৬ষ্ট থেকে ৮ম শ্রেনী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পাঠদান করে ২০১২ সাল পর্যন্ত। পাঠদানের অনুমতি পায় ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১২ সালে। প্রাথমিক পাঠদানের অনুমতি পায় ৮ম শ্রেনী পর্যন্ত। স্বীকৃতি পায় ৮ম শ্রেনী পহেলা নভেম্বর ২০১৭ সালে। মাধ্যমিক স্কুল হিসেবে স্বীকৃতি পায় বিদ্যালয়টি ২৫ নভেম্বর ২০১৯ ইং।
পহেলা জুন ২০২২ইং প্রতিষ্টানটি বিভিন্ন চড়াই-উতরাই পেরিয়ে এমপিওভুক্ত হয়।
এছাড়াও বিধি মোতাবেক নিয়োগ হয়ে নবাগত প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ কাইচার লিটন প্রতিষ্টানটিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।
এদিকে একটি জরার্জীণ ভবনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান হলেও এখন সরকারের পক্ষ থেকে করা হয়েছে চারতলা বিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন ভবন। নতুন ভবনটি উদ্বোধনের অপেক্ষার প্রহর গুণছে।
স্থানীয়রা বলেন, গ্রামের কাছাকাছি মাধ্যমিক বিদ্যালয় না থাকায় প্রাথমিকের গন্ডি পেরিয়ে অনেক শিক্ষার্থী অকালে ঝড়ে পড়তো। প্রাথমিকের পর গ্রামের যেসব শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা চালিয়ে যেতো তাদের ঝড়বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঝুঁকি নিয়ে নৌকাযোগে পাশ্ববর্তী বদরখালী নদীপথ পাড়ি দিয়ে যেতো হতো বদরখালী আজহার উচ্চ বিদ্যালয়ে। এছাড়া পাহাড়ি এসব এলাকায় বাল্যবিয়ের প্রবণতাও বেশি। প্রাথমিকের গন্ডি পেরুলেই এখানকার মেয়েদের বিয়ের জন্য তাগিদ দেওয়া হয়। তারা বলেন, এই বিদ্যালয়ের ফলে সরাসরি উপকৃত হবেন তারা। তাদের সন্তানদের এখন থেকে আর ঝড়বৃষ্টি উপেক্ষা করে মহেশখালী-বদরখালী নদী পাড়ি দিয়ে স্কুল পর্যায়ে অন্যত্র পড়তে যেতে হবে না।
জানাগেছে, বর্তমানে মাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান ও বাণিজ্যে বিভাগ চালু করতে আবেদন শিক্ষা মন্ত্রাণালয়ে জমা হয়েছে। উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে বিষয়টি মনঞ্জুর করা হবে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানা গেছে।
অপরদিকে অত্র এলাকার অবহেলিত মেধাবী গরীব শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানমুখী পড়া শোনা করার জন্য এ প্রক্রিয়া চলমান। পাশাপাশি ব্যবসা শিক্ষার পাঠদান চলমান।
জলেয়ারমারঘাট আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবাগত প্রধান শিক্ষক কাইচার লিটন বলেন, প্রাণের বিদ্যাপীঠ (জে এম ঘাট) জলেয়ারমারঘাট আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয়ে বলেন তিনি বলেন সবার সার্বিক সহযোগিতা পেলে স্কুলটি অনেক দুর এগিয়ে নিয়ে যাব।